স্বদেশ ডেস্ক:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের গণরুমে ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচজনের বহিষ্কারাদেশ বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (২৬ জুলাই) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় দেয়। একইসাথে এক বছরের বহিষ্কারাদেশের বদলে পুনরায় শাস্তি নির্ধারণে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় ঘটনায় জড়িত পাঁচ ছাত্রীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এ দিকে গত ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্ত বিধিসম্মত হয়নি বলে মন্তব্য করেন উচ্চ আদালত।
বুধবার (২৬ জুলাই) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের দ্বৈত বেঞ্চের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। রিট আবেদনের পক্ষে আইনজীবী গাজী মো: মহসীন, রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানী করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত ওই বহিষ্কারাদেশ বাতিল করে আদালত। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অব কন্ডাক্টের প্রথম ভাগের ৪, ৫ ও ৭ ধারা এবং দ্বিতীয় ভাগের ৮ (২) ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে বিশ্ববিদ্যালয়কে নির্দেশ দেয় আদালত। এছাড়া এ বিষয়ে আগামী ২৩ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলেরও নির্দেশ দেয়া হয়।
রিটকারী আইনজীবী গাজী মো: মহসিন বলেন, ‘আদালত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে বাতিল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির যে বিধান আছে সে বিধান অনুসরণ করে শাস্তি দিয়ে আগামী ২৩ আগস্ট হাইকোর্টকে জানাতে বলেছে। এ ক্ষেত্রে কোন কোন ধারায় শাস্তি দিতে হবে তা-ও উল্লেখ করে দিয়েছেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোড অব কন্ডাক্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, প্রথম ভাগের ৪ ধারা মতে, কোনো শিক্ষার্থীর অপরাধের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যা যথোপযুক্ত মনে করে সেই শাস্তি দিতে পারেন। ৫ ধারা মতে, রাষ্ট্রীয় আইনের চোখে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শাস্তি দিতে পারেন। দ্বিতীয় ভাগের ৮(২) ধারা অনুযায়ী ভিসি সর্বোচ্চ এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে শৃঙ্খলা কমিটির নিকট প্রেরণ করবে। এসব ধারার আলোকে অভিযুক্তদের আরো অধিক শাস্তির সুযোগ আছে বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা।
এ বিষয়ে নির্যাতনের শিকার ফুলপরী খাতুন বলেন, ‘আমি তাদের আজীবন বহিষ্কারের দাবিতে অনড় রয়েছি।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। আমরা অফিসিয়ালি নির্দেশ পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’